Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

সচ্চরিত্রতায় হযরত ফাতিমা রাযি.-এর অনুপম আদর্শ

সচ্চরিত্রতায় হযরত ফাতিমা রাযি.-এর অনুপম আদর্শ
সচ্চরিত্রতায় হযরত ফাতিমা রাযি.-এর অনুপম আদর্শ

 

আজকাল ফিল্ম, মডেলিং, রাজনীতি, পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশে চাকুরী, বিমানবালা (এয়ারহোস্টেস) ইত্যাদি লজ্জা-বিনষ্টকারী কর্মক্ষেত্রের প্রতি আধুনিকশিক্ষায় শিক্ষিত নারীদের আগ্রহ বাড়ছে এবং দুনিয়াবী জাঁকজমক, সাজসজ্জা ও অর্থসম্পদের বিপরীতে সম্ভ্রম ও সতীত্ব, সচ্চরিত্রতা ও চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার গুরুত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে গোটা সমাজ যৌন-বিশৃঙ্খলা ও অশ্লীলতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে যে, আমাদের (মুসলিম) নারীদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ ও আইডল কি এই সম্ভ্রমহীন নারীরা, যারা আজ দুনিয়াকে পূতিগন্ধময় করে রেখেছে নাকি ঐ পবিত্রা ও সচ্চরিত্রা প্রখ্যাত মুসলিম মহীয়সী নারীগণ, যাঁরা চারিত্রিক পবিত্রতার বদৌলতে দুনিয়ায়ও অতুলনীয় সম্মান পেয়েছেন এবং আখেরাতেও সম্মানের মুকুট তাঁদেরই মাথায় থাকবে? এই প্রেক্ষাপটেই নিচের কথাগুলো লেখা হয়েছে, যা নারীদের বিশেষত স্কুল- কলেজপড়ুয়া কিশোরী-যুবতী ছাত্রীদের কাছে পৌঁছানো জরুরী; ভালো হবে ঘরের মহিলাদের একত্রিত করে এই কথাগুলো শুনিয়ে দেয়া, যাতে তাদের মধ্যে লজ্জাহীন নারী ও মেয়েদের অনুকরণের পরিবর্তে খাতুনে-জান্নাত, নবীজীর কলিজার টুকরা, হযরত হাসান ও হুসাইন রাযি.-এর জননী সাইয়িদাতুনা হযরত ফাতিমা যাহরা রাযি. ও তাঁর মতো পবিত্রা ও সম্মানিতা মহিলাদের পথে চলার প্রেরণা সৃষ্টি হয়।

আশা করি, এই আবেদনের প্রতি মনযোগ দেয়া হবে। হযরত ফাতিমা রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরমপ্রিয় আদরের কন্যা ছিলেন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সম্পর্কে একাধিকবার এ কথা إنما فاطمة بضعة مني يؤذيني ما آذاها অর্থাৎ ফাতিমা আমার অংশ; তাকে যা কষ্ট দেয় তা আমাকেও কষ্ট দেয়। (সহীহ মুসলিম; হা.নং ২৪৪৯) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চিরাচরিত অভ্যাস ছিলো, যখন তিনি সফর থেকে ফিরতেন তখন মসজিদে নামায আদায়ের পর সর্বপ্রথম হযরত ফাতিমা রাযি.-এর সাথে সাক্ষাৎ করতে যেতেন, এরপর সম্মানিতা বিবিগণের সঙ্গে দেখা করতেন।


একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে এসে যথারীতি হযরত ফাতিমা রাযি.-এর ঘরে গেলেন, তখন নবীদুহিতা হযরত ফাতিমা রাযি. ঘরের দরজায় নবীজীকে স্বাগত জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি প্রাণাধিক প্রিয় সম্মানিত পিতাকে দেখে ব্যাকুল হয়ে গেলেন; নবীজীর চেহারা মোবারক ও চক্ষুদ্বয়ে চুমু খেতে লাগলেন এবং অনিচ্ছাসত্ত্বেও কেঁদে ফেললেন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন- 'তুমি কাঁদছো কেন?' হযরত ফাতিমা রাযি. উত্তর দিলেন- আপনাকে এলোমেলো চুলে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত দেখে (কাঁদছি)। আর আপনার জামাকাপড়ও পুরনো হয়ে গেছে (কেননা তখন সফর থেকে ফেরার কারণে নবীজীর পবিত্র শরীরে সফরের চিহ্ন দৃশ্যমান ছিলো, যা দেখে হযরত ফাতিমা রাযি.-এর মন আপ্লুত হয়েছিলো)। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, বেটি! কেঁদো না। মূলত আল্লাহ তা'আলা তোমার পিতাকে একটি যিম্মাদারী দিয়ে পাঠিয়েছেন; তা হলো, পৃথিবীর বুকে এমন কোনো কাঁচা-পাকা ঘর যেন অবশিষ্ট না থাকে, যেখানে দীন ইসলাম প্রবেশ করেনি; দীন যেন প্রত্যেক এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যতদূর রাত আসে (অর্থাৎ আমি আল্লাহ তা'আলার এই আদেশ পালনার্থেই সকল কষ্ট বরদাশত করছি; সুতরাং এতে দুঃখিত হওয়ার কিছু নেই)। [হাশিয়া: নিসাউন ফী যিল্লি রাসূলিল্লাহ পৃ. ৩৩৬, তাবারানী ও আল-মুসতাদরাক লিল-হাকিম সূত্রে] 

'খাতুনে জান্নাত'-এর মর্যাদাউম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল-পূর্ব অসুস্থতার সময় তাঁর সকল সম্মানিতা বিবিগণ তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। এসময় হযরত ফাতিমা রাযি. হাঁটতে হাঁটতে সেখানে আসেন; তাঁর হাঁটাচলার ধরন অবিকল নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুরূপ ছিলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁকে দেখলেন তখন এই বলে স্বাগত জানালেন- مرحبا بابنتي (আমার মেয়েকে স্বাগতম!) এবং তাঁকে নিজের ডানে বা বামে বসালেন। এরপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফাতিমা রাযি.-কে কানে কানে কিছু বললেন, যা শুনে হযরত ফাতিমা রাযি. অনেক কাঁদতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ব্যাকুলতা দেখে পুনরায় কানে কানে কিছু বললেন, যা শুনে হযরত ফাতিমা রাযি. হাসতে শুরু করলেন। (এক বর্ণনায় আছে, হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, আমার জীবনে আমি কাউকে দুঃখিত হওয়ার পর এত দ্রুত খুশি হতে দেখিনি। অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, হযরত ফাতিমা রাযি.-কে কাঁদতে দেখে আমি বললাম,আপনি কাঁদছেন কেন, অথচ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল সম্মানিতা বিবিকে ছেড়ে আপনার সাথে কথা বলেছেন!) মজলিস শেষ হওয়ার পর আমি হযরত ফাতিমা রাযি.-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে কানে কানে কী বলেছেন? তিনি বললেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোপন কথা প্রকাশ করবো না।

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর আমি হযরত ফাতিমা রাযি.-কে আমার আত্মীয়তার দোহাই দিয়ে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন নবীজীর সাথে সেদিনের কানাঘুষার ব্যাপারে আমাকে অবশ্যই বলেন। তখন হযরত ফাতিমা রাযি. বললেন, হাঁ আমি এখন বলবো। এরপর তিনি বলা শুরু করলেন- আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমবার কানে কানে বললেন, 'হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম প্রতিবছর আমার সাথে একবার কুরআন শরীফের দাওর করতেন; এ বছর তিনি দু'বার দাওর করেছেন। এজন্য আমার মনে হচ্ছে, পৃথিবী থেকে আমার বিদায়ের সময় ঘনিয়ে এসেছে।


কাজেই তুমি সর্বদা আল্লাহকে ভয় করবে এবং ধৈর্যধারণ করবে; কেননা আমি তোমার জন্য উত্তম পূর্বপুরুষ (অগ্রবর্তী)।' তখন আমি কেঁদে ফেললাম, যেমনটি আপনি সেদিন দেখেছেন। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ব্যাকুলতা দেখে পুনরায় আমার কানে কানে কথা বললেন। তিনি বললেন- 'তুমি কি এটা চাও না যে, তোমাকে সকল মুমিন নারীর বা এই উম্মতের নারীদের সরদার বানিয়ে দেওয়া হবে?' অন্য এক বর্ণনায় আছে, 'তুমি কি এটা পছন্দ করো না যে, তোমাকে জান্নাতী নারীদের সরদার বানিয়ে দেওয়া হবে? এটা শুনে আমি হেসে দিলাম, যেমনটা আপনি দেখেছেন। (সহীহ বুখারী হা.নং ৩৬২৩, সহীহ মুসলিম; হা.নং ২৪৫০) হযরত হুযায়ফা রাযি. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'আকাশ থেকে একজন ফেরেশতা অবতরণ করলেন, যিনি আল্লাহ তা'আলার কাছে আমাকে সালাম দেয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। এই ফেরেশতা ইতিপূর্বে কোনোদিন অবতরণ করেননি। তিনি এসে আমাকে এই সুসংবাদ শোনালেন যে, হযরত ফাতিমা রাযি. জান্নাতী মহিলাদের সর্দার হবেন।' (আল- মুসতাদরাক লিল-হাকিম; হা.নং ৪৭২২, নিসাউন ফি যিল্লি রাসূলিল্লাহ- এর সূত্রে, পৃ. ৩৩৪) হযরত ফাতিমা রাযি. জান্নাতী নারীদের সর্দার হওয়ার মর্যাদা শুধু এ কারণে লাভ করেননি যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সবচেয়ে প্রিয় কন্যা ছিলেন এবং এজন্যও নয় যে, তিনি রূপ-সৌন্দর্যের অধিকারিণী ছিলেন; বরং তাঁর এই অভাবিত মর্যাদার মূল রহস্য ও প্রকৃত কারণ হলো তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, যার ব্যবহারিক নমুনা তিনি পৃথিবীর সামনে উপস্থাপন করেছেন।


যদি তাঁর মধ্যে এই অনন্য বৈশিষ্ট্য না থাকতো তাহলে কেবল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে রক্তের সম্পর্ক বা তাঁর নিজস্ব সৌন্দর্য জান্নাতী নারীদের সর্দার হওয়ার মর্যাদালাভে যথেষ্ট হতো না।

চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষায় হযরত ফাতিমা রাযি.-এর দৃষ্টিভঙ্গিমানুষ মনে করে, শ্রেষ্ঠ নারী হলো সে, যে অসামান্য রূপ-সৌন্দর্যের অধিকারিণী হয়, সাজসজ্জা ও মেকআপে অনন্যা হয়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, মার্কেটে বা শপিংমলে এবং মেলা বা উৎসবে যেতে তার কোনো সংকোচ হয় না। এমন নারীদেরই আজ পছন্দের দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং এসব বিষয়ে নারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা দেখা যায়। কিন্তু এ ব্যাপারে খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমা রাযি.-এর মনোভাব কী ছিলো, তা নিম্নবর্ণিত ঘটনা থেকে সহজেই বোঝা যায়। হযরত আলী রাযি. বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিসে এ আলোচনা হচ্ছিলো যে, মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো গুণ কী? মজলিসের সকলে নিরুত্তর রইলেন। মজলিসের পরে হযরত আলী রাযি. ঘরে গেলেন এবং হযরত ফাতিমা রাযি.-কে জানালেন যে, আজ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিসে এ আলোচনা চলছিলো যে, মেয়েদের মধ্যে সর্বোত্তম কে? এ ব্যাপারে আপনার মত কী? হযরত ফাতিমা রাযি. বললেন, মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো গুণ হলো- তারা কোনো পরপুরুষকে দেখবে না আর কোনো পরপুরুষের দৃষ্টি তাদের উপর পড়বে না। হযরত আলী রাযি.এই কথাগুলো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে শোনালেন। নবীজী তা সত্যায়ন করলেন এবং বললেন, ফাতিমা (রাযি.) তো আমারই অংশ (অর্থাৎ সে শরীয়তের যথার্থ ব্যাখ্যাই করেছে)। 

ঘরের কাজকর্মের ব্যাপারে হযরত ফাতিমা রাযি.-এর কর্মপদ্ধতিহযরত ফাতিমা রাযি.-এর রোখসতের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে গৃহস্থালি কাজকর্মের' কিছু আসবাবপত্রের (চামড়ার গদি, মশক, মটকা এবং চাক্কি ইত্যাদি) ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

হযরত ফাতিমা রাযি. নিজ হাতেই চাক্কিতে আটা পিষতেন, আটার খামির করতেন, রুটি সেঁকতেন এবং ঘরের অন্যান্য কাজকর্মও নিজেই করতেন, যে কারণে তাঁর হাতে দাগ বসে গিয়েছিলো। একবার তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তাঁকে একজন খাদেম দেওয়ার আবেদন করেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় মেয়েকে খাদেম দেওয়ার পরিবর্তে একটি বিশেষ তাসবীহ শিখিয়ে দিয়েছিলেন, যাকে 'তাসবীহে ফাতেমী' বলা হয়।হযরত আলী রাযি. বলেন, আহলে- বাইতের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সবচেয়ে প্রিয়ভাজন ছিলেন হযরত ফাতিমা রাযি., যিনি আমার বিবাহবন্ধনে ছিলেন। নিয়মিত চাক্কিতে আটা পেষার কারণে তাঁর হাতে দাগ বসে গিয়েছিলো, চামড়ার মশক থেকে পানি বের করার কারণে তাঁর বুকে দাগ পড়ে গিয়েছিলো, ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজের কারণে তাঁর কাপড়চোপড় ধুলোমলিন ও মেটে-বর্ণ ধারণ করেছিলো, চুলায় খাবার রান্না করার কারণে তাঁর কাপড়গুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো।


মোটকথা, তাঁর উপর গৃহস্থালী কাজকর্মের বড় বোঝা ছিলো। একবার আমরা জানতে পারলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু গোলাম-বাঁদী এসেছে। তখন আমি হযরত ফাতিমা রাযি.-কে উৎসাহ দিলাম, যেন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে একজন খাদেম দেওয়ার আবেদন করেন, যে তার কাজকর্মের সহযোগী হবে। তখন হযরত ফাতিমা রাযি. এই উদ্দেশ্যে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন। কিন্তু সেখানে আরো কিছু মানুষ বসে থাকায় হযরত ফাতিমা রাযি. লজ্জাবশত ফিরে আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানতে পারলেন যে, তিনি এসেছিলেন এবং ফিরে গেছেন তখন তিনি নিজেই বিকেলের দিকে হযরত ফাতিমা রাযি.-এর ঘরে হাজির হলেন। তখন হযরত ফাতিমা ও হযরত আলী রাযি. উভয়ে চাদর গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফাতিমা রাযি.-এর শিয়রের কাছে বসলেন। হযরত ফাতিমা রাযি. লজ্জায় নিজের মুখ চাদর দিয়ে ঢাকলেন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'তুমি আমাদের ঘরে কী প্রয়োজনে এসেছিলে?' দু'বার জিজ্ঞেস করার পরে-ও যখন হযরত ফাতিমা রাযি. জবাব দিলেন না তখন আমি (হযরত আলী রাযি.) বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি বলছি। বিষয়টি হলো, চাক্কি চালানোর কারণে এবং মশক থেকে পানি নেওয়ার কারণে তার শরীরে দাগ পড়ে গেছে, ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও চুলা জ্বালানোর কারণে কাপড়চোপড় নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা জেনেছি যে, আপনার কাছে কিছু খাদেম এসেছে; তখন আমিই তাকে উৎসাহ দিয়েছি, তিনি যেন আপনার কাছে গিয়ে খাদেমের জন্য আবেদন করেন। এজন্য তিনি আপনার কাছে গিয়েছিলেন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আমি কি তোমাদের আবেদনকৃত বস্তুর চেয়ে উত্তম বস্তুর কথা তোমাদের বলে দিবো না? যখন তোমরা ঘুমানোর জন্য বিছানায় শয়ন করো তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়ে নিবে। এটা তোমাদের জন্য খাদেমের চেয়ে উত্তম হবে।' (সুনানে আবু দাউদ; হা.নং ৫০৬২, ৫০৬৩)অন্য এক বর্ণনায় আছে, তারা খাদেম চাওয়ায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, 'কসম আল্লাহর! এটা হতে পারে না যে, আমি তোমাদেরকে খাদেম দিয়ে দিবো আর সুফফায় অবস্থানরত দরিদ্র সাহাবায়ে কেরাম রাযি. অভুক্ত পড়ে থাকবেন। আমি এই গোলামগুলোকে বিক্রয় করে এগুলোর বিক্রয়মূল্য আসহাবে-সুফফার পেছনে ব্যয় করবো।' এরপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাসবীহাত পড়ার হুকুম দিলেন, যেমনটা উপরে বিবৃত হয়েছে। (নিসাউন ফি যিল্লি রাসূলিল্লাহ, পৃ. ২৩) দেখুন! এই ছিলো সেই মহীয়সী নারীর জীবনপদ্ধতি, যিনি দো-জাহানের সরদার হযরত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয়তম কন্যা ছিলেন এবং দুনিয়াতেই 'খাতুনে জান্নাত' হওয়ার সুসংবাদ পেয়েছিলেন। অপরদিকে আজকের আধুনিক নারীদের অবস্থা হলো, গৃহস্থালি কাজকমের' পরিবর্তে ঘরের বাইরের কাজকর্মের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষত স্কুল-কলেজপড়ুয়া মেয়েরা এই চিন্তাচেতনা নিয়ে গড়ে উঠছে যে, তাদের কর্মক্ষেত্র ঘর নয়; বরং বাইরের সমগ্র পৃথিবী; তারা খেলার মাঠে আগে বাড়বে, নৃত্যকলা-গানবাদ্য (যাকে 'চারুকলা'র চটকদার নাম দেয়া হয়েছে) শিখে পাপাচারীদের বিনোদনের ব্যবস্থা করবে, জীবনের সকল ক্ষেত্রে পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে, না স্বামীর আনুগত্যের চিন্তা থাকবে আর না বাচ্চাদের তরবিয়তের অনুভূতি থাকবে; যাতে পৃথিবী থেকে সামাজিক পরিবারব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং পশ্চিমা নারীরা যেমন পাপাচারের নাপাক পানিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত, সমগ্র বিশ্বে যেন এমন অশ্লীলতার পরিবেশ ছড়িয়ে দেওয়া যায়। আজ এই পর্দাহীনতা বরং অসভ্যতাকে সম্মানের মাপকাঠি বানিয়ে নেয়া হয়েছে আর পর্দা-পুশিদাকে সেকেলে ও প্রগতিশীলতার অন্তরায় বলে অভিহিত করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় সকলের কিছু করা উচিত এবং কিছু বোঝা উচিত।


একজন মুসলিম নারীর এ কথা বোঝা জরুরী যে, এই অন্তঃসারশূন্য স্বাধীনতায় কখনোই মর্যাদা ও নিরাপত্তা অর্জিত হবে না; বরং মুসলিম নারীর প্রকৃত সম্মান সেসকল আচারব্যবহার, চালচলন, সতীত্বরক্ষা ও পবিত্রতায়ই অর্জিত হবে, যা অবলম্বন করে হযরত ফাতিমা রাযি. অনন্য সম্মান লাভ করেছেন, মহীয়সী নবী-পত্নীগণ মহত্বের মর্যাদা পেয়েছেন এবং সম্মানিতা সাহাবিয়াগণের নাম দুনিয়া ও আখিরাতে উজ্জ্বল হয়েছে। কেবলমাত্র এই পূতপবিত্র জীবনাচারই নারীর সম্মানের কারণ; এছাড়া অন্য কোনো পথে নারীর সম্মান অর্জিত হয়নি, হতে পারে না।

চূড়ান্ত পর্যায়ের সচ্চরিত্রতা'খাতুনে জান্নাত' নবীজীর কলিজার টুকরা হযরত ফাতিমা রাযি.-এর সচ্চরিত্রতা ও চারিত্রিক পবিত্রতার কিছুটা এ ঘটনা থেকেও আন্দাজ করা যায় যে, যখন তিনি মৃত্যুশয্যায় ছিলেন এবং বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন তখন তিনি তাঁর শুশ্রূষাকারিণী (হযরত আবু বকর রাযি.-এর স্ত্রী) হযরত আসমা বিনতে উমায়স রাযি.-কে অত্যন্ত আক্ষেপভরা কণ্ঠে বলছিলেন- 'যখন আমার মৃত্যু হয়ে যাবে তখন আমার মরদেহ উন্মুক্ত অবস্থায় খাটিয়ায় রেখে নিয়ে যাওয়া হবে (এবং আমার কাফনের উপর বেগানা পুরুষের দৃষ্টি পড়বে), এসব কথা চিন্তা করে আমার লজ্জা লাগছে।' এ কথা শুনে হযরত আসমা রাযি. বললেন, আমি আপনাকে এমন জানাযা বানিয়ে দেখাবো, যা হাবশা অঞ্চলে মহিলাদের জন্য বানানো হয়। হযরত ফাতিমা রাযি. তাকে দেখাতে বললেন। তখন হযরত আসমা রাযি. কয়েকটি তাজা ডাল আনালেন এবং সেগুলোকে লাঠি বানিয়ে খাটিয়ার উপর এমনভাবে দাঁড় করালেন যে, সেগুলোর উপরে চাদর টানিয়ে দিলে ভিতরে মরদেহের অস্তিত্ব বোঝা যায় না।


হযরত ফাতিমা রাযি. এমন জানাযার পদ্ধতি দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলেন এবং মুচকি হেসে নিজের খুশিরও জানান দিলেন, অথচ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর থেকে তাঁকে কখনো হাসতে দেখা যায়নি। হযরত ফাতিমা রাযি.-এর ইন্তেকালের পর এমন পদ্ধতিরই জানাযা বানানো হয়েছিলো এবং রাতেই তাঁকে দাফন করা رضي الله عنها وأرضاها (নিসাউন ফি যিল্লি রাসূলিল্লাহ, পৃ.৩৪৮-৩৪৯)এমনই ছিলো তাঁর চারিত্রিক পবিত্রতা। মৃত্যুর পর বেগানা পুরুষদের দৃষ্টি পড়ার চিন্তায় লজ্জা পাচ্ছেন। অপরদিকে আজকের নির্লজ্জ নারীদের অবস্থা হলো, পর্দাহীনতা ও নগ্নতায় তাদের মোটেও লজ্জা অনুভব হয় না; বরং পারিপার্শ্বিক কারণে শরীরকে পোশাকের বন্দিত্ব থেকে মুক্ত করতে পারে না। এই স্বাধীনচেতা মনোভাবকে আজ উন্নতি ও প্রগতির মাপকাঠি মনে করা হয়; অথচ এই পোশাকহীনতা নারীর জন্য সম্মান নয়, বরং নিকৃষ্টতম অপমানকর। কিন্তু পার্থিব জাঁকজমকের কারণে এবং তীক্ষ্ণবুদ্ধির কুচক্রীদের প্যানিংয়ে এমন পরিবেশ তৈরি হয়েছে যে, নির্বোধ নারীরা নিজেদের অপমানকেই সম্মান মনে করে নিয়েছে এবং পর্দা, যা প্রকৃতিগতভাবেই তার নিরাপত্তার রক্ষাকবচ ছিলো তাকেই নিজের জন্য বোঝা মনে করছে। লজ্জায় ডুবে মরি!কয়েকদিন পূর্বে অধম (লেখক) ট্রেনে করে দিল্লী থেকে মুরাদাবাদ আসছিলাম। আমার কাছাকাছি আসনে একজন অমুসলিম যুবক বসেছিলো। সে কথার এক পর্যায়ে একজন টেনিস খেলোয়াড় মুসলিম মেয়ে (যার নাম উচ্চারণ করাও ভদ্র মানুষের জন্য লজ্জাকর) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো যে, তার ব্যাপারে আপনার কী মত? আমি বললাম যে, যদি আপনার ঘরের কোনো নারী এভাবে অর্ধনগ্ন হয়ে মানুষের সামনে আসে তাহলে আপনার কেমন লাগবে? সে বললো, আমার তো অবশ্যই খারাপ লাগবে। আমি বললাম, ইসলামও এটাই বলে যে, কোনো নারীর জন্যই এরকম নির্লজ্জতা বৈধ নয়। এ কথা শুনে সে পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ ও সময়ের কুখ্যাত এক চিত্রনায়িকার নাম নিয়ে বিদ্রুপের সুরে বলতে লাগলো, আপনি ইসলামের নাম নিচ্ছেন আর এই পাকিস্তানী নায়িকা ভারতীয় চলচ্চিত্রে এসে এমন উন্মুক্ত দৃশ্যে অভিনয় করেছে যে, অতীতের নগ্নতার সকল রেকর্ড ভেঙে গেছে। আমি বললাম, খারাপ তো সর্বদাই খারাপ।


ভারতীয়, পাকিস্তানী বা অন্য যে কোনো দেশের মানুষ ভুল করবে তাকে সর্বাবস্থায় ভুলই বলতে হবে। তাছাড়া পাকিস্তান কোনো ইসলামের প্রতিনিধিত্বশীল দেশ নয় যে, সেখানকার কোনো পাপাচারিণী পাপিষ্ঠা নায়িকার কাজকর্মকে ইসলামের দিকে সম্পৃক্ত করা হবে। আর নির্লজ্জ নর- নারী যেমন ভারতে আছে তেমনই পাকিস্তানেও আছে। কিন্তু ইসলাম এ ধরনের সকল কাজের বিরুদ্ধে এবং এর তীব্র নিন্দা করে। আমি তাকে উত্তর দিয়ে নিরুত্তর তো করে দিলাম; কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই আত্মমর্যাদা-বোধহীন ও নির্লজ্জ নারীরা ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বে কালিমা লেপন করেছে এবং ইসলামের পবিত্র শিক্ষাগুলোকে বিধর্মীদের দৃষ্টিতে ধূলিধূসরিত করে দিয়েছে। এই চিত্রনায়িকা ও খেলার মাঠে লম্ফঝম্ফকারিণী নারীরা নিঃসন্দেহে ঐ হাদীসেরই সত্যায়ন,যে হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, উম্মতের মধ্যে এমন নারীরা প্রকাশ পাবে, যারা পোশাক পরেও নগ্ন থাকবে এবং নিজে পরপুরুষের প্রতি আকৃষ্ট ও পরপুরুষকে আকর্ষণকারিণী হবে। এমন নারীরা জান্নাতে যাওয়া তো দূরের কথা,জান্নাতের সুবাস থেকেও বঞ্চিত থাকবে;অথচ জান্নাতের সুবাস বহুদূর থেকেও পাওয়া যায়। (সহীহ মুসলিম; হা.নং ২১২৮)আমাদের নারীদের চিন্তা করা উচিত যে, তারা কার অনুসরণে চলবে? ফ্যাশনেবল ও আত্মমর্যাদা-বোধহীন আধুনিক নারীদের পথে, যা জাহান্নামে পৌঁছে দিবে নাকি ঐসকল পবিত্রা নারীদের অনুসরণ করবে, যাদের আদর্শের অনুসরণই জান্নাতে যাওয়ার নিশ্চয়তা? যদি আমাদের মধ্যে দীন ও ঈমানের ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট থেকে থাকে তাহলে আমাদের অবশ্যই লজ্জাহীন নারীদের পরিবর্তে সম্মানিতা নবীপত্নীগণকে ও সাহাবিয়াদেরকে নিজেদের অনুকরণীয় আদর্শ ও আইডল বানানো উচিত এবং চারিত্রিক শুদ্ধতা ও সচ্চরিত্রতা এবং তাকওয়া ও পবিত্রতার জীবন যাপন করা উচিত। বিশেষত মেয়েদের মন-মানসিকতা এভাবে গড়ে তোলা উচিত যে, তাদের মধ্যে ফ্যাশন- সচেতনতা এবং সাজসজ্জা ও রূপসৌন্দর্যের বিপরীতে পারলৌকিক কামিয়াবী অর্জনের জযবা ও স্পৃহা সৃষ্টি হয় এবং চারিত্রিক পবিত্রতা ও সচ্চরিত্রতার গুরুত্ব তাদের মন-মস্তিষ্কে গেঁথে যায়।ঘরের নারীদের নির্লজ্জ কার্যকলাপে নীরবতা অবলম্বনকারী মাল'ঊন, অভিশপ্ত! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তিন ধরনের লোক জান্নাতে যাবে না-১. এমন পুরুষ, যে নারীদের মতো পোশাক পরিধান করে। ২. এমন নারী, যে পুরুষদের মতো পোশাক পরিধান করে।৩. দাইয়ূস ব্যক্তি (অর্থাৎ যে নিজ পরিবারের মানুষের নির্লজ্জ কার্যকলাপ দেখেও নীরব থাকে)। (শু'আবুল ঈমান ৭/১৬৭)আফসোস! আজ মেয়েদের, স্ত্রীদের এবং বোনদের নির্লজ্জতায় শুধু নীরবতাই নয়; বরং এই নগ্নতাকে নাউযুবিল্লাহ গর্বের বিষয় মনে করা হয়। উদাহরণস্বরূপ উল্লিখিত ঐ নারী টেনিস-খেলোয়াড় যখন খেলার মাঠে সাফল্য পেতে শুরু করে তখন তার মাতাপিতা সাংবাদিকদের সামনে খোলাখুলিভাবে মেয়ের সাফল্যে সীমাহীন খুশি প্রকাশ করেছে।


ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী এমন মাতাপিতা, যারা নিজ মেয়ের নগ্নতায় সন্তুষ্ট থাকে তারা সম্মানের পাত্র নয়; বরং তারা 'দাইয়ূস' আখ্যায়িত হওয়ার উপযুক্ত, হাদীস শরীফে যাদের উপর লা'নতের কথা এসেছে। এটা খুশির নয়; বরং লজ্জায় ডুবে মরার জায়গা যে, মুসলিম মাতাপিতার তত্ত্বাবধানে মেয়েরা নগ্নতার প্রদর্শনী করছে এবং মুসলিম মাতাপিতা তাতে অসন্তোষ প্রকাশের পরিবর্তে তাদেরকে খোলাখুলিভাবে সাধুবাদ দিচ্ছে। এটা ইসলামের তরীকা নয়; বরং শয়তান-পূজারীদের তরীকা, যা থেকে সর্বদা বেঁচে থাকা জরুরী। নিঃসন্দেহে মেয়েদের শিক্ষা দেয়া ও শিক্ষিত বানানোর প্রয়োজনীয়তা আছে; কিন্তু যদি তাদের এমন শিক্ষা ও আদর্শ দেয়া হয়, যাতে তাদের নারীত্ব ও সতীত্ব কলঙ্কিত হয় তাহলে সেটা শিক্ষা নয়; বরং চূড়ান্ত পর্যায়ের মূর্খতা; কোনো সুস্থ বিবেক-সম্পন্ন মানুষ কোনোভাবেই এই নগ্নতা ও নির্লজ্জতার সমর্থন করতে পারে না। কাজেই আমাদের মা- বোনদের সর্বদা হযরত ফাতিমা রাযি.- এর আদর্শ সামনে রাখা উচিত এবং তাঁরই অনুকরণের চেষ্টা করা উচিত। এখানেই নিহিত আছে তাদের সম্মান, এবং এখানেই তারা পরকালীন মুক্তির নিশ্চয়তা পেতে পারে।আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সর্বপ্রকার নির্লজ্জতা ও তার সকল উপায়-উপকরণকে ঘৃণা করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

Post a Comment

0 Comments